মাদক বিরোধী অভিযান ও প্রাণের প্রয়াণ

বাংলাদেশের চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে সর্ব দৃষ্টিকোণ থেকে সমর্থন করি এবং সর্বাত্মক সফলতা কামনা করছি | মাদক এক মরণ নেশা যা তিলে তিলে একটি সুন্দর জীবনকে নিঃশেষ করে দেয়| যার কলংকিত ছাপ এড়াতে পারেনা পরিবার ও সমাজ | মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষে সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয় | আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পেতে পারে যথাযথ প্রাপ্য| কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে কিছু প্রশ্ন থেকেই যায় |

১. টার্গেট কিলিং হচ্ছে না তো ?
২. প্রতিপক্ষ ঘায়েল এর জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে না তো ?
৩. ভুল তথ্যের প্রয়াগে কোন জীবন নাশ হচ্ছে কি ?
৪ . রাঘব বোয়ালেরা ধরা পড়বে তো ?

দেশ ব্যাপী এতো বড় অভিযান পরিচালনায় কিছু অপ্রাসঙ্গিক অথবা অপ্রতিকর ঘটনা ঘটবে এটাই স্বাভাবিক |
উপরোক্ত প্রতিটি প্রশ্নই যেন উত্তর খুঁজে পায় কক্সবাজারে মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত পৌর কমিশনার একরামুল হকের স্ত্রী আয়েশা বেগম এর সংবাদ সম্মেলন ও উনার প্রদত্ত অডিও ক্লিপ |
একরামুল হক দোষী কি নিৰ্দোষ সে বিষয়ে আমার কোন আগ্রহ নাই | সর্ব হৃদয়ে আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দু হচ্ছে যে প্রক্রিয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে এবং লাশের উপর পূর্ব পরিকল্পনার মহড়া দেওয়া হয়েছে | তা কি আদৌ আইন সম্মত ? যদি একরামুল গং হত্যাকান্ড আইন সমর্থনযোগ্য হয় তাহলে আদালতের প্রয়োজন আছে কি ? আইন শৃঙ্খলা বাহিনীইতো যথেষ্ট যখন যাকে যে শাস্তি দিতে ইচ্ছা হয় বন্দুকের ট্রিগার এর মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ নিশ্চিত করে দিতে | ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কোন নারীকে স্বামী হারা , সন্তানকে পিতৃ হারা , মাকে সন্তান হারা , বোনকে ভাই হারা করা হবে তাদের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ মাত্র | সভ্য কোন দেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এই রকম হত্যাকাণ্ডের ক্ষমতা আছে বলে আমার জানা নাই | সব সম্ভাবনার দেশ আমার সোনার বাংলায়ই কেবল দেখছি আর অবাক হচ্ছি ! বিস্ময়ে ভাবছি , একি বাংলাদেশের মানুষের জীবন যেন স্বল্প মূল্যের ইতর প্রাণীর চেয়েও সস্তা ! আত্মপক্ষ সমর্থনের নূন্যতম সুযোগ থেকেও বঞ্ছিত হচ্ছে সাধারণ নাগরিক | কেন আমাদের পবিত্র ঘামের টাকায় জুডিশিয়ারি পরিচালিত হচ্ছে ? বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের খবর সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে আর ইলেক্ট্রিনিক মিডিয়ায় চোখ রাখতে |

অপর দিকে , যারা জীবন বাজি রেখে আমাদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করে যাচ্ছে তাদের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে না কি ?