ব্যাঙ্গচিত্রের অপসারণ ও ক্ষমা প্রার্থনা

ইতালি বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রের একটি যে দেশের রয়েছে শক্ত অর্থনৈতিক অবস্থা ফলেসেখানকার নাগরিক জীবনে রয়েছে মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা,চিকিৎসা সেবা ইত্যাদি

বর্তমান বিশ্বের অস্তিত্বকে হুমকিতে ফেলে দেওয়া মহামারী নাম করুনা ভাইরাস যা বিশ্বেরসকল গোলার্ধকেই ক্রমান্বয়ে ধাবিয়ে দিচ্ছে বিনা বাঁধায় উহান কাঁপিয়ে মরণ সংক্রামকঅচেনা এক রুপে মাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ইউরোপের দেশ ইতালিকে।

নিরীহ মুসলিমদের নিয়ে তীর্যক কর্ম পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত ইতালিয়ানরাও করেছে যা কিনা পাঁচ শতাধিক বছর পূর্বেরগোড়াপত্তন এত বছর পর করুনার নীরব হিংস্র থাবার সাথে তার কি সেতু বন্ধন ?

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মনোনীত দ্বীন বা ধর্ম হচ্ছে ইসলাম হযরত মোহাম্মদ (সা🙂 সর্বশ্রেষ্ঠ সর্ব শেষ রাসূল ইহা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের ঈমানী আকিদা বা বিশ্বাস

ইতালির ‘San Petronio Basilica’  নামক গির্জায় মহানবীকে ব্যাঙ্গ করে বানানো একটি ব্যাঙ্গচিত্র প্রতিস্থাপন করা আছে সেই ১৪০৯ সালে যা প্রায় ৬১১ বছর ধরে চলমান যে ব্যঙ্গচিত্রেদেখানো হয়েছে মহানবীকে নরকের রক্ষীরা নির্যাতন করছে। যা প্রিয় নবী করীম ( সা🙂 শান মানের সাথে বড়োই বেমানান। নিশ্চয়ই মহান রব ব্যাপারে ওয়াকিবহাল।
(সূত্র: https://bit.ly/395rxru, https://bit.ly/39bLXPs)

আমার হৃদয়ের দৃঢ় বিশ্বাস নবী প্রেমী মুসলমান মাত্রই নবীর অপমানে প্রতিবাদ করে সেইপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে

২০০১ সালে ইতালির মুসলমানরা ব্যঙ্গচিত্রটিকে গির্জা থেকে অপসারণ ধ্বংস করার দাবীকরে (https://bit.ly/2QxL9hx)  কিন্তু চিরাচরিত নিয়মের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় দায়িত্বশীলকতৃপক্ষ। ইতালি সরকার

মুসলমানদের দাবী আমলে না নিয়ে দমন পীড়ন নীতির আশ্রয় নেন যথারীতি সেখানকার মুসলমানদেরকে লাঞ্চিত হয়রানি করেন

প্রতিহিংসার বশে গির্জা নিয়ে ষড়যন্ত্রের  মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মুসলমানদের দমানোর জন্য২০০২ সালে জন মুসলমানকে গ্রেফতার করে স্থানীয় পুলিশ   (https://nyti.ms/2U8YsHp)

প্রকৃতপক্ষে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাই জন্ম দেয় মহানবীকে নিয়ে কলঙ্কজনক কার্যক্রমের পুরোইউরোপ জুড়ে একটি জোয়ার উঠে মহানবীর ব্যঙ্গচিত্র নির্মাণের। যার ধারাবাহিকতায় ২০০৫সালে ৩০শে সেপ্টেম্বর ইউরোপীয়ান রাষ্ট্র ডেনমার্কের জিল্যান পোস্টেনে মহানবীর ১২টিব্যঙ্গকার্টুন প্রকাশ করে(https://bit.ly/2J1rFxu) এরপর ২০০৬ সালে নরওয়ে কার্টুনগুলোতাদের দেশে পুনঃপ্রচার করে।

পরবর্তীতে একই বছরের ১লা ফেব্রুয়ারী একযোগে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং স্পেন জিল্যানপোস্টেনের কাটুর্নগুলো রিপ্রিন্ট করা শুরু করে। ৮ই ফেব্রুয়ারী ফ্রান্সের পত্রিকা শার্লি হেবদোমহানবীর ব্যঙ্গচিত্র প্রথম পাতায় বড় করে প্রিন্ট করে।  ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি এসে ইতালিসরকারের তৎকালীন এক মন্ত্রী ঘোষণা দেয়, মহানবীর ব্যঙ্গচিত্র সম্বলিত টিশ্যার্ট সে সবারমাঝে বিলি করবে (https://bbc.in/2whHYUl)

সেই বছরের এপ্রিলে এসে  ইতালির ক্যাথলিক সট্যাডি (Studi Cattolici) নামক একটি মাসিকখ্রিষ্টিয় পত্রিকা ‘San Petronio Basilica’ চার্চে সংরক্ষিত Giovanni da Modena ব্যঙ্গচিত্রকেঅনুকরণ করে নতুন কার্টুন প্রকাশ করে (https://bit.ly/33xQCdq) এরপর খুব দ্রুত এই ব্যঙ্গকার্টুনের বিষয়টি সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৭ থেকে ইসলাম মহানবীর ব্যঙ্গ নিয়েব্যাপক কাজ শুরু করে নেদারল্যান্ডের এমপি গ্রিট উইল্ডার্স। পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশে এইব্যঙ্গচিত্রে প্রদর্শনীসহ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয় এবং কয়েকটি ব্যঙ্গাত্মক মুভিও নির্মিত হয়, যানিয়ে সারা বিশ্বেজুড়ে মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরী করেছিলো। পুরো বিষয়টি তখনইউরোপীয়ান দেশগুলোতে রাজনীতিবিদ খ্রিষ্টীয় জনগণের মাঝে ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা পায়এবং বিষয়টি কাজে লাগিয়ে এন্টি ইমিগ্র্যান্ট ইস্যু বড় হতে থাকে, যা পুরো ইউরোপেররাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। বাংলাদেশেও এক পর্যায়ে সেই ইউরোপী ইসলামবিদ্বেষীগ্রুপের কার্যক্রম চলে আসে। বাংলাদেশে নাস্তিক ব্লগার নামে আমরা যাদের চিনি, যারা বিভিন্নসময় ইসলাম বা মহানবী নিয়ে কুৎসিত রচনা করে আলোচনায় আসে তাদেরকেও পেছন থেকেপৃষ্ঠপোষকতা করে ইউরোপ ভিত্তিক সংস্থাপেন ইন্টারন্যাশনাল’ ((হেডকোয়ার্টার ব্রিটেন) এইপেন ইন্টারন্যাশনালবাংলাদেশের কিছু ছেলেকে ইউরোপে থাকা খাওয়ার লোভ দেখিয়েবাংলাদেশেও সেই ব্যঙ্গচিত্র ব্যঙ্গ রচনার প্রকাশ করা শুরু করে। এবং পর্যায়েক্রমে সবকথিত ব্লগারকে ভিসা দিয়ে ইউরোপে নিয়ে যায়।


মোদ্দা
কথা , গত  দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে  সারা বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের শেষ নবী, কোরআন বা ইসলাম নিয়ে যে ব্যঙ্গচিত্রের কার্যক্রম তা কিন্তু শুরু হয়েছিলো ইতালির চার্চেরভেতর সংরক্ষিত ৬১১ বছর পুরাতন সেই বঙ্গচিত্রকে কেন্দ্র করেই।

সাম্প্রতিক সময়ের মহামারীতে চরম বিপর্যস্ত ইতালির পরিস্থিতি অবলোকন সমগ্র বিশ্ব সর্বাধুনিক  চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং বহুমুখী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও অসহায়  মৃত্যুরস্রোত ঠেকাতে অপারগ, যা বিন্দুমাত্র চিন্তাশীলদের জন্য হতে পারে ভাবনার খোরাক

পবিত্র কুরআনুল কারীমের সূরা তওবায় মহান আল্লাহ বলেন ,

এরা কি দেখে না, প্রতি বছর এদেরকে একবার বা দুবার পরীক্ষার মুখোমুখি করা হয়?  কিন্তুএরপরও এরা তাওবাও করে না, কোন শিক্ষাও গ্রহণ করে না।” [আততওবা, :১২৬]

তাই সর্বশেষ আমি বলতে চাই , ইতালির সরকার আলোচ্য ব্যাঙ্গচিত্রের দ্রুত অপসারণ করেবিশ্ব প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে দেখতে পারেন আশা করি দয়ালু মনিব উনাদেরনাজুক পরিস্থির পরিত্রাণ দিবেন