আহ্বান

মানুষ হচ্ছে আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকেজ্ঞানবিদ্যা, বুদ্ধিমত্তা, সামর্থ্য যোগ্যতায় করেছেন অনন্য শ্রেষ্ঠত্ব ফজিলত দান করার পাশাপাশি আল্লাহ পাক মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান জানানোর দায়িত্বও দিয়েছেন। এইপবিত্র দায়িত্ব পালন করা মানুষের অপরিহার্য কর্তব্য।

আহ্বান বা ডাকাকে আরবী ভাষায় বলা হয়দাওয়াত  দাওয়াত  শব্দটির মূল ধাতু হচ্ছেদায়া এর আভিধানিক অর্থ হলো ডাকা, আহ্বান করা, আমন্ত্রণ জানানো, উৎসাহিত করা ইত্যাদি। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় ইহকালীন কল্যাণ মঙ্গল এবং আখিরাতের মুক্তি নিস্কৃতির উদ্দেশ্যে মানব জাতিকে ইসলামী জীবন বিধানের দিকে ডাকা বা আহ্বান করাকে দাওয়াতবলা হয়।

পৃথিবী সৃষ্টি লগ্নের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে কালে কালে স্রষ্টা   স্রষ্টার দেয়া বিধানকে ভুলে গিয়ে মানুষ যখনই পথভ্রষ্ট হয়ে অন্ধকারে ধাবিত হয়েছে তখনই আল্লাহ তায়ালা করুণাময় হয়ে নবী বা রাসূল প্রেরণ করে সঠিক সরল পথ প্রদর্শনের দিক নির্দেশনা প্রেরণ করেছেন

সকল নবী রাসূলগণই নিজ নিজ জাতির কাছে সর্ব প্রথম তাঁর প্রকৃত মালিক অধিকর্তা আল্লাহর দিকে আহ্বান করেছেন। যেহেতু হযরত মোহাম্মদ (সা🙂 হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ    সর্বশেষ  পয়গম্বর তাই স্বাভাবিক ভাবেই কিয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত এই পৃথিবীতে আর কোনো নবীরাসূল আগমন করবেন না। তাহলে প্রিয় নবীর রেখে যাওয়া কর্মযজ্ঞ কি চলমান থাকবে না ? অবশ্যই এই ধারা কিয়ামত অবধি চলমান থাকবে নিঃসন্দেহে যারা প্রিয় রাসূলের (সা🙂 প্রকৃত অনুসারী উম্মত তারাই কুরআন এবং সুন্নাহর আলোকে দুনিয়ার মানুষকে আল্লাহর প্রকৃত বান্দাহ হওয়ার জন্য দাওয়াতের কাজটি চালিয়ে যাবেন।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর আল্লাহর পথে আহ্বান করার দায়িত্ব অর্পণ করে ইরশাদ করেছেন:

() আপনি আপনার প্রতিপালকের পথে হিকমত সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান করুন এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করুন। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালকই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট বিচ্যুত হয়েছে এবং হিদায়াত প্রাপ্তদের তিনি ভালো করেই জানেন।(সূরা নাহল : আয়াত১২৫)

() বলুন, এটা আমার পথ। আমি জেনে বুঝে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেই। এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারাও। আর আল্লাহ পবিত্র মহান এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। (সূরা ইউসুফ : আয়াত১০৮)


(
) আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা হামীম সিজদাহ : আয়াত৩৩)

() হে নবী! আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা সতর্ককারীরূপে আরআল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারী আলোকদীপ্ত প্রদীপ হিসেবে। (সূরাআহযাব : আয়াত ৪৫৪৬)

() হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের নিকট হতে আপনার নিকট যা নাজিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দিন, আর যদি আপনি না করেন তবে আপনি তাঁর রিসালাত পৌঁছালেন না। আর আল্লাহ আপনাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না। (সূরা মায়িদাহ : আয়াত ৬৭)

() হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুররাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন; একটি আয়াত হলেও তা আমার পক্ষ হতে প্রচার করো।আর বনী ইস্রাইল সম্পর্কে আলোচনা করো। তাতে কোনো দোষ নেই। সে ব্যক্তি আমার প্রতিইচ্ছাপূর্বক মিথ্যা আরোপ করে তার উচিত নিজ চিরস্থায়ী ঠিকানা জাহান্নামে সন্ধান করা।(সহীহ বুখারী : /৩৪৬১)

() হযরত হুযায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, যার হাতে আমার জীবন। অবশ্যই তোমরা সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অন্যায় পাপ কাজ থেকে মানুষকে বারণ করবে। নতুবা তোমাদের ওপর শীঘ্রই আল্লাহর আযাব নাজিল হবে। অতঃপর তোমরা (আল্লাহর আযাব হতে নিস্কৃতি লাভের জন্য) দুআ করতে থাকবে কিন্তু তোমাদের দ্আু কবুল হবে না। (জামেয়ে তিরমিজী)

 আল্লাহর পথে মানুষকে আহ্বান না করার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হবে তা সহজেই অনুমেয়।সুতরাং দাওয়াতী কাজে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত রাখা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব এই কর্তব্য কর্মের অবহেলা করার কারণেই প্রসারিত হচ্ছে বিশ্ব জোড়া মহামারী মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছে প্রশান্তির আশায় বিজ্ঞজনরাতো মানব সভ্যতার অস্তিত্ব নিয়েই শংকিত আছেন !

মনিবের বাণী প্রচারে আত্মনিবেদনের এটাইতো মূখ্য সময় দ্বীনি ভাইয়েরা আমার